Wabe Development

ওয়েব ডিজাইন শিখতে যেসব জানতে হবে
এইচটিএমএল : এটা একটা মার্ক আপ ল্যাংগুয়েজ, প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ নয়, শেখা খুব সহজ।
সিএসএস : এটাও মার্ক আপ ল্যাংগুয়েজ
ফটোশপ : এখানে যে মুল কাজটি শিখতে হবে তাহল পিএসডি থেকে এইচটিএমএল টেমপ্লেট (PSD to HTML) বানানো এছাড়া ব্যানার, বাটন, এনিমেশন তৈরী করা এসব জানতে হবে।
অতিরিক্ত হিসেবে ফ্ল্যাশ দিয়ে এনিমেশন তৈরী করা শিখতে পারেন।

 

যেভাবে ওয়েব ডিজাইন শিখবেন

বিভিন্ন ওয়েব সাইটের টিউটোরিয়াল থেকে ওয়েব ডিজাইন ভালভাবে শিখতে পারবেন। বাংলা ইংরেজি অনেক সাইট আছে এসব শেখার।ওয়েব ডিজাইন শেখা বেশ সহজ, কয়েকমাসেই শেখা সম্ভব।ভালভাবে শিখতে পারলে ওয়েব ডিজাইনের উপর প্রচুর চাকরি এবং ফ্রিল্যান্সিং এ হাজার হাজার কাজ পাওয়া যায়।

 

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে ওয়েবসাইটের জন্য এপ্লিকেশন তৈরী করা।উপরে যে এপ্লিকেশনগুলির উল্লেখ করেছি এধরনের আরো হাজারো এপ্লিকেশন আছে, ওয়েব ডেভেলপারকে এসব এপ্লিকেশন তৈরী করতে হবে। যদি ফ্রিল্যান্সিং করেন তাহলে ক্লাইন্টের চাহিদা অনুযায়ী এমনও এপ্লিকেশন তৈরী করা লাগতে পারে যার অস্তিত্ব পৃথিবীতে নেই। এই বিষয়টি বেশি চ্যালেন্জিং এবং ডাইনামিক।অর্থ্যাৎ আপনাকে এপ্লিকেশন ডিজাইন করতে হবে। তাই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কে আরও সুনির্দিষ্ট করে বলা যায় ওয়েব এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট

 

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে যেসব জানতে হবে

এইচটিএমএল, সিএসএস এবং এরপর নিচেরগুলি..
ক্লাইন্ট সাইড প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ যেমন জাভাস্ক্রিপ্ট : এটাকে ব্রাউজার স্ক্রিপ্টিং ও বলা হয় অর্থ্যাৎ এই ল্যাংগুয়েজ দিয়ে লেখা কোড শুধু কোন ব্রাউজারে (যেমন ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, মজিলা ফায়ারফক্স, অপেরা, গুগল ক্রোম ইত্যাদি) কাজ করবে।জাভাস্ক্রিপ্টের ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে দ্রুত কাজ করা যায়। এরুপ একটি ফ্রেমওয়ার্ক জেকোয়েরি টিউটোরিয়াল
সার্ভার সাইড প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ যেমন পিএইচপি : এটাকে সার্ভার সাইড স্ক্রিপ্টিং বলা হয় কারন এই ল্যাংগুয়েজ দিয়ে লেখা কোডগুলি শুধু সার্ভারে এক্সিকিউট হয়।
ডেটাবেস : পিএইচপি দিয়ে কিভাবে ডেটাবেস সংযোগ করতে হয়, এসকিউয়েল দিয়ে ডেটাবেস বানানো অর্থ্যাৎ ডেটাবেস ডিজাইন জানতে হবে কারন এখন যেকোন ডাইনামিক সাইটের ডেটাবেস আছে অথবা বলতে পারেন ডেটাবেস থাকতেই হয়।
পিএইচপি এর যেকোন একটা ফ্রেমওয়ার্ক যেমন কোডইগনাইটার : (আরও আছে যেমন কেক পিএইচপি, জেন্ড ফ্রেমওয়ার্ক, সিমফনি, ওয়াই আইআই, কোহানা ইত্যাদি একটা শিখলেই চলবে) : কোন ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়াও ওয়েব এপ্লিকেশন তৈরী করতে পারবেন তবে এতে বেশি সময় লাগবে এবং বেশি কোড লিখতে হবে।
এক্সএমএল : API, ছোটখাট ডেটা স্টোরিং ইত্যাদির জন্য এক্সএমএল লাগে।

 

যেভাবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখবেন

বাংলা ইংরেজি অনেক সাইট আছে এসবের টিউটোরিয়াল থেকে শিখতে পারবেন। এছাড়া Wrox বা Apress পাবলিকেশনের অনেক ভাল ভাল বই আছে সেগুলির সাহায্য নিতে হবে। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার সবচেয়ে কার্যকরী কৌশলটি হল "বসে যান এবং একটা প্রজেক্ট তৈরী করুন" হতে পারে একটা ফোরাম, ব্লগ, ইউজার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা এই ধরনের কোন প্রজেক্ট। raw PHP দিয়ে করুন। এরপর সিএমএস বা ফ্রেমওয়ার্ক ডেভেলপমেন্টে যান।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে অনেক সময় লাগবে, শেখা কঠিন এবং প্রচুর ধৈর্য্য সাথে আগ্রহ লাগবে।চাকরি ক্ষেত্রে বা ফ্রিল্যান্সিং এ ওয়েব ডেভেলপারের চাহিদা আকাশছোয়া।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর ভবিষ্যত এবং ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার 

 

ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট এর মাধ্যমে কিভাবে আউটসোর্সিং করে ইন্টারনেটে অর্থ আয় করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন অভিজ্ঞ একজন ফ্রিল্যান্সার যিনি প্রায় ৬/৭ বছর ধরে সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে সিনিয়র সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন এবং কয়েক বছর থেকে ফ্রিল্যান্সিং করছেন
আমার আজকের এই লেখা তাদের জন্য যারা খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং এ পথ খুঁজছেন। আমি আজকে এটাই বুঝাতে চাইব যে কাজ খোজার আগে নিজেকে কাজের জন্য প্রস্তুত করুন।
প্রথমেই যে জিনিসটি আপনাকে মনে রাখতে হবে সেটা হচ্ছে আপনি বড় ধরণের একটা প্রতিযোগিতায় নামতে যাচ্ছেন যেখানে আপনার প্রতিযোগী হবে সারা বিশ্ব থেকে আরও অনেক মানুষ।
ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং এ অনেক ধরনের কাজ পাওয়া যায় তবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সংক্রান্ত কাজ এখানে সবচেয়ে বেশি। প্রথমে আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে আপনি কোন কাজটি করবেন এরপর সেটা ভালভাবে শিখে নিন এবং সবশেষে আউটসোর্সিং এ আসুন।

গ্রাফিক্স ডিজাইন

ডিজাইনের কাজের বেশ চাহিদা আছে অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলিতে। এজন্য আপনাকে শিখতে হবে মুলত ফটোশপ এবং ইলাস্ট্রেটর এর কাজ। ফটোশপ দিয়ে লোগো, বাটন, ব্যানার ইত্যাদি তৈরী করতে পারতে হবে। ফটোশপ দিয়ে পিএসডি (PSD) লেআউট ডিজাইনের কাজের প্রচুর চাহিদা।
  •  অনলাইনে প্রচুর টিউটোরিয়াল পাবেন ফটোশপ এবং ইলাস্ট্রেটরের। এদুটি জিনিসে সিদ্ধহস্ত হতে হবে।
  •  গ্রাফিক্সের কাজ করতে সৃজনশীলতা (creativity) বড় একটি দক্ষতা। আপনার সৃজনশীলতা যত গভীর হবে আপনি তত নতুন নতুন আইডিয়া তৈরী করতে পারবেন। এবং আপনার ডিজাইন হবে সবার থেকে আলাদা ফলে আপনার চাহিদাও হবে সবার থেকে বেশি।
  • শেখা মোটামুটি সহজ, প্রতিদিন ৩/৪ ঘন্টা করে পরিশ্রম করলে ৬ মাসেই প্রফেশনাল পর্যায়ের PSD ডিজাইন করা সম্ভব। (মেধার উপর নির্ভরশীল)

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট

এখানে মুলত দুটি ভাগ করা যায়
  •   ওয়েব ডিজাইন তথা এইচটিএমএল, সিএসএস, এবং জাভাস্ক্রিপ্ট ভালভাবে শেখা
  •   ডেভেলপমেন্ট তথা প্রোগ্রামিং ভালভাবে শেখা

ওয়েব ডিজাইন

এজন্য আপনাকে শিখতে হবে এইচটিএমএল, সিএসএস এবং মোটামুটি জাভাস্ক্রিপ্ট (বিশেষ করে কোন ফ্রেমওয়ার্ক যেমন জেকোয়েরি)। ফটোশপের মোটামুটি আইডিয়া থাকতে হবে। যেমন পিএসডি থেকে এক্সএইচটিএমএল করতে যতকিছু লাগে ততটুকু। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট তথা প্রোগ্রামিং জগতে ঢোকার প্রথম দরজা হল ওয়েব ডিজাইন। ভাল ডিজাইনার না হলে ভাল প্রোগ্রামার হতে পারবেন না। প্রোগ্রামিং এ যদি ক্যারিয়ার নাও করেন শুধু ওয়েব ডিজাইনের চাহিদাও কম নয়।

  •  এটাও শেখা সহজ, শিখতে ৬-৮ মাস লাগতে পারে যদি প্রতিদিন ৪/৫ ঘন্টা পরিশ্রম করেন। মেধার উপর ভিত্তি করে এর থেকে সময় কমবেশি লাগতে পারে।
  •  অনলাইনের প্রচুর টিউটোরিয়াল আছে এখান থেকে শিখতে পারেন। এই সাইটেও প্রচুর রিসোর্স আছে।
  •  ব্রাউজার কম্প্যাটিবিলিটি তথা আপনার ডিজাইন করা পেজ যেন সব ব্রাউজারে একই রকম দেখায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে।
  •  বর্তমানে রেসপনসিভ ডিজাইনের যুগ। এজন্য রেসপনসিভ ডিজাইন করতে পারতে হবে। বিশেষ করে এটার জন্য ব্যবহৃত ফ্রেমওয়ার্কের কাজ ভাল জানতে হবে। যেমন টুইটার বুটস্ট্রাপ। মোবাইল সহ যেকোন ডিভাইসে আপনার ডিজাইন করা পেজ যেন একই রকম দেখায়, আড়াআড়িভাবে স্ক্রলিং করতে না হয়।
  •  প্রয়োজনীয় টুলস যেমন বিভিন্ন IDE, IE tester, IE তে ব্রাউজার মোড বদলানো, ফায়ারবাগ ইত্যাদি শিখতে হবে।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা প্রোগ্রামিং

এখানে আপনাকে প্রোগ্রামিং শিখতে হবে। এটাই মুল জিনিস ডেভেলপমেন্টে। মূলত ওয়েব প্রোগ্রামিং যেমন ASP.NET, PHP, Java বা অন্য কোন ল্যাংগুয়েজ। তবে পিএইচপির কাজ বর্তমানে সবচেয়ে বেশি। ওয়েব ডেভেলপমেন্টে প্রোগ্রামিং শেখার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট প্রচুর জিনিস শিখতে হবে। তা নাহলে বেশি উপরে উঠতে পারবেন না। যেমন ভালভাবে শেখা দরকার
১. যেকোন একটা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ মুলত পিএইচপি
২. ডেটাবেস ডিজাইন যেমন মাইসিক্যুয়েল দিয়ে কমপক্ষে মধ্যম পর্যায়ের একটা পূর্নাঙ্গ রিলেশনাল ডেটাবেস বানাতে পারতে হবে।
৩. খুব ভাল কোয়েরি শিখতে হবে। SQL দিয়ে জটিল কোয়েরি করতে পারতে হবে।
৪. ফেইসবুক/গুগল/টুইটার/অ্যামাজন ইত্যাদি বিখ্যাত সাইটের ওয়েব সার্ভিস/ API ব্যবহার করা জানা উচিৎ। (এক্সএমএল)
৫. হোস্টিং সমন্ধে স্বচ্ছ ধারনা বিশেষ করে সার্ভার ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে ধারনা থাকা উচিৎ।
৬. সোর্স কন্ট্রোল যেমন git, tortoise svn ইত্যাদি দিয়ে কিভাবে একই প্রজেক্টে একাধিক ডেভেলপার কাজ করা যায় এসব জানতে হবে।
৭. এজাক্স, জেকোয়েরি এবং ডেভেলপমেন্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন টুলস সম্পর্কে প্রচুর জানতে হবে। যেমন নেটবিনস (কোড লেখার IDE), HeidiSQL, MySQL WorkBench (ডেটাবেস ডিজাইন টুল) এসব জানতে হবে।

সর্বোপরি ওয়েব ডিজাইনের কাজে সুপার সুপার এক্সপার্ট হতে হবে। অর্থ্যাৎ এইচটিএমএল, সিএসএস এবং জেকোয়েরি এসবের কাজ বাম হাতেই সেরে ফেলার মত যোগ্যতা থাকতে হবে। একজন ভাল প্রোগ্রামার হতে হলে আগে ভাল ডিজাইনার (বরং সুপার এক্সপার্ট) হতে হবে

যে কাজই করতে চান না কেন আগে সেটাতে দক্ষতা অর্জন করুন এরপর ফ্রিল্যান্সিং এ যান। কিছু জানলেন কিংবা ভাসা ভাসা ধারনা এরুপ দক্ষতা নিয়ে ওডেস্ক বা যেকোন মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খোলা হতাশা ছাড়া কিছু দিতে পারবেনা।
এছাড়া ফ্রিল্যান্সিং এ আসার আগে ভাল সফটওয়্যার ফার্মে ১.৫/২ বছর চাকুরি করে আসা উচিৎ। চাকুরি না করে আউটসোর্সিং আসলে খুব বেশি উপরে ওঠা জটিল।

বেশির ভাগ লোকজন কিভাবে ওডেস্কে একাউন্ট খুলতে হবে, কিভাবে কাজ পাওয়া যেতে পারে এসব কৌশল শিখতে তৎপর অথচ কাজ তেমন একটা শেখেনি। মার্কেটপ্লেস গুলিতে একাউন্ট খোলা ফেইসবুকের মতই সহজ এরপর কয়েকটি পরীক্ষা দিয়ে প্রোফাইল সমৃদ্ধ করতে পারেন। যেকোন বিড করার (যেমন ওডেস্কে “Apply to this Job”) সময় কভার লেটার তথা আবেদনটি একটু আকর্ষনীয় করে লেখা উচিৎ। ভাল কভার লেটারের নমুনা ঐ সাইটগুলিতেই পাবেন। এগুলি খুবই অগুরত্বপূর্ন বিষয় এবং পানির মত সহজ। এগুলি নিয়ে চিন্তা না করে আগে টেকনিকালি এক্সপার্ট হউন।

লেখক পরিচিতি
=====================================

মোঃ মইন উদ্দিন

২০০৬ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে। এর পর থেকেই বিভিন্ন সফটওয়্যার ফার্মে চাকুরি করেছেন সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ার হিসেবে। সর্বশেষ “ব্রেইন স্টেশন – ২৩” তে সিনিয়র সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ার  হিসেবে প্রায় ৩ বছর ধরে ছিলেন। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছেন কয়েক বছর ধরে। ওডেস্ক, ইল্যান্স সহ বেশ কয়েকটি মার্কেটপ্লেস থেকে সফলভাবে এন্টারপ্রাইজ লেভেলের পিএইচপি প্রজেক্ট করেছেনnext

No comments:

Post a Comment